শরীয়তপুর, :
পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম এমপি বলেছেন, বিএনপির নিজেদের নেতৃত্ব নিয়েই সমস্যা। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুজনের সাজাপ্রাপ্ত আসামী। খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতায় বাসায় থাকতে পারছে। আর তারেক রহমান বিদেশে পলাতক। সেই নেতৃত্বহীন বিএনপি দেশের নেতৃত্ব চাওয়া হাস্যকর।
আজ(মঙ্গলবার) দিনব্যাপী শরীয়তপুরের নড়িয়ায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপমন্ত্রী শামীম আরও বলেন, স্বৈরচারী আদর্শ ও সন্ত্রাসের ধারক-বাহক এবং উগ্র-সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি সবসময় গণতন্ত্রের পথকে ভয় পায়। তাদের রাজনীতি হলো যে কোনো উপায়ে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত এবং সন্ত্রাসের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির তথাকথিত আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ায় তারা এখন পাগলের প্রলাপ বকছেন। বিদেশি প্রভুদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত সাড়া না পেয়ে এবং জনগণ দ্বারা বার বার প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিএনপি নেতারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বিএনপি এক এক সময় এক এক কথা বলে।
উপমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র, সংবিধান, আইনের শাসন, নির্বাচনী ব্যবস্থা হত্যা করে এখন তারা নিজেদের গণতন্ত্রকামী হিসেবে প্রকাশ করছে, যা হাস্যকর। সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান ও তার উত্তরসূরী খালেদা জিয়ার শাসনামলে দেশে শুধুমাত্র যুদ্ধাপরাধী ও পাকিস্তানপন্থীরা রাজনীতি করতে পেরেছে। তাদের সময় সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অবাধ বিচরণ ছিল।
মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও প্রগতিশীল চেতনা নির্বাসিত ছিল উল্লেখ করে উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম বলেন, ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতা দখলের পর আওয়ামী লীগের ২৪ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের জাতীয় নেতৃবৃন্দকে হত্যার উদ্দেশ্যে ‘সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশ’-এ নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২২ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়।
আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, নিজেদের কৃতকর্মের জন্য বিএনপির মধ্যে কোনো অপরাধবোধ নেই। তারা এখনো ওই হামলাকারীদের পক্ষে সাফাই গায়। আরেকটি ১৫ই আগস্ট সৃষ্টির হুমকি দেয়। যে দল নিজেরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে না, দেশের মানুষকে তারা কী গণতন্ত্র দেবে?
শামীম বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মানিবক, কল্যাণকর ও সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণে গত দেড় দশকে বাংলাদেশ এক অভূতপূর্ব উন্নয়ন-অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় ধারাবাহিভাবে এগিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত হয়েছে। এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিশসভায় আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। তাই আগামী নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনা আবারও ক্ষমতায় আসবেন।
এসময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ওহাব বেপারী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপ কমিটির সদস্য জহির সিকদার, নড়িয়া পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক মাল, সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান খোকন, উপদেষ্টা জোবায়েদা হক অজন্তা, উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান জাকির বেপারী, জপসা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার মাদবর, ভোজেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সিকদার, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী আহমেদ সিকদার, সাধারন সম্পাদক খান জাহাঙ্গীর প্রমূখ।
এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা এ এফ এম নুরুল হক হাওলাদার (সাবেক সংসদ সদস্য) সেতু, ভূমখাড়া ইউনিয়নে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলাবক্স মিয়া সড়ক (পাটদল যুক্তিতলা ব্রিজের পূর্ব দিক হতে পন্ডিতসার পর্যন্ত) এবং কীর্তিনাশা নদীর উপর ভোজেশ্বর-জপসা সেতু ও বিঝারী উপসী তারাপ্রসন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, নড়িয়া পৌরসভার ৪টা সড়ক ও অফিসার্স ক্লাব আয়োজিত টেনিস টূর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম।