
মোজাম্মল আলম ভূঁইয়া- হাওরাঞ্চল প্রতিনিধি,সুনামগঞ্জ:
সুনামগঞ্জে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মবাষির্কী উদযাপন উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য
সাহিত্য উৎসব সম্পন্ন হয়েছে। জাতীয় সাহিত্য সংগঠন কাব্য কথা
সাহিত্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির আয়োজনে গতকাল শুক্রবার (১২ই
ফেব্রæয়ারি) বিকেল ৪টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত জেলা শিল্পকলা একাডেমির
হাছনরাজা মিলনায়তনে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে মুজিববর্ষ ও
সাহিত্যের আলোচনা, স^রচিত কবিতা, ছড়া, পুঁথিপাঠ, নৃত্য, বাউল
গানের আসর ও সুনামগঞ্জ সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। দেশের নবিন-
প্রবীণ শতাধিক কবি সাহিত্যিক ও সহশ্রাধিক দর্শক শ্রোতাদের
উপস্থিতিতে এই প্রাণের উৎসবে মেতে উঠে জেলার বিভিন্ন শ্রেণীপেশার
লোকজন।
সন্ধ্যা ৬টায় কাব্য কথা সাহিত্য পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ সহ-
সভাপতি কবি ডাঃ আতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উৎসবের সভায়
বক্তব্য রাখেন- বাংলা একাডেমির উপ-পরিচালক, গবেষক ড. তপন বাগচী,
সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি
এডভোকেট শফিকুল আলম, সুনামগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর আবাবিল নূর,
ছড়াশিল্পী ও শিশুসাহিত্যিক হাসনাত আমজাদ, কবি ও কথাশিল্পী মোহাম্মদ
আব্দুল হক, সাহিত্যিক জসীম আল ফাহিম, জেলা গীতিকার ফোরামের
সাধারন সম্পাদক অরুন তালুকদার, সাহিত্যক আলী সিদ্দিক, শিল্পী তুলিকা
ঘোষ চৌধুরী, বাউল কামাল পাশা সংস্কৃতি সংসদ সুনামগঞ্জ এর
প্রতিষ্ঠাতা আহবায়ক কবি সাংবাদিক আল-হেলাল, কবি অনু প্রান্তিক,
কবি দিলদার হোসেন দিলু, কবি ও সমাজসেবক সাবিনা আনোয়ার,
রাজনীতিক দিলোয়ার হোসেন দুলাল, উক্ত সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ
সম্পাদক জালাল খান ইউসুফী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কবি
মোহাম্মদ বাদশা গাজী, কবি প্রভাষক ফজলুল হক দোলন, কেন্দ্রীয় সদস্য কবি
কবি মামুন সুলতান প্রমুখ।
সভা শেষে রাত ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত বাউল পরিবেশন করেন- বাঊল
বিরহী কালা মিয়া, বাউল হেলাল খান, বাউল রোকসানা ভান্ডারী, বাউল-
সাংবাদিক আল-হেলাল, শিল্পী রুমি খান ময়না, বিরহী রিপা বেগম, বাউল
আব্দুল রব আব্দুল্লাহ, বাউল আলাউদ্দিন, বাউল আব্দুল কাইয়্যুম, বাউল কবির
মিয়া, গীতিকার নির্মল কর জনি, ডাঃ হাফিজুর রহমান, শিল্পী সোমা
আক্তার, শিক্ষক নজিবুর রহমান, বাউল দু:খী হাসান, বাউল তৈয়বুর রহমান, ফকির
সমছু মিয়া।
বাউল গান শেষে সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় অবদানের জন্য সুনামগঞ্জ
সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন- কথাশিল্পী মনি হায়দার, বাউল বিরহী কালা মিয়া,
ছড়াশিল্পী দেলোয়ার হোসেন দিলু, কবি হিলারী হিটলার আভী, কবি আবদুল
হান্নান ইউজেটিক্স, কবি শফিকুল ইসলাম সোহাগ, কবি ফজলুল হক দোলন,
কবি অজয় রায়, ধীরেন্দ্র কুমার দেবনাথ শ্যামল, মোঃ মিছবাহ উদ্দিন, কবি
মোঃ সহিদ মিয়া ও বাউল-সাংবাদিক আল-হেলাল।
উক্ত উৎসব অনুষ্ঠানের সভায় বক্তারা বলেন, দেশ স্বাধীনের ৪৯ বছর পর এবার
মুজিববষে প্রথমবারের মতো সুনামগঞ্জে সাহিত্য উৎসব অনুষ্ঠিত হলো। এ
উদ্যোগ ইতিহাসে একদিন মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে। সুনামগঞ্জের
পল্লীমায়ের সাহিত্যকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। জেলা প্রশাসনের
একাধিকবারের প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে পঞ্চরতœ বাউলের মধ্যমণি গানের
স¤্রাট বাউল কামাল পাশা ও জ্ঞানের সাগর দূর্বিণ শাহকে রাষ্ট্রীয়ভাবে
স্বীকৃতি দিতে হবে। সুনামগঞ্জকে বাংলার সাংস্কৃতিক রাজধানী
হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। অনুষ্ঠানে ভাষা আন্দোলনের অগ্রসৈনিক শেখ
মুজিবুর রহমানকে নিয়ে দেশের সর্বপ্রথম সংগীত রচয়িতা সুনামগঞ্জের
বাউল কামাল পাশা রচিত “শেখ মুজিব কারাগারে,আন্দোলন কেউ নাহি
ছাড়ে/সত্যাগ্রহে এক কাতারে সামনে আছেন সামাদ ভাই/ঢাকার বুকে
গুলি কেন নুরুল আমিন জবাব চাই” শীর্ষক ঐতিহাসিক গানটি পরিবেশন
করেন বাউল-সাংবাদিক আল-হেলাল।
পরে রাত ১২টায় পুথী স¤্রাট কবি জালাল খান ইউসুফির সমাপনী
পুথিপাঠের মধ্যে দিয়ে সাহিত্য উৎসব অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।