মোঃ হারুন অর রশিদ:
ইন্টারনেট ও ফেসবুক বন্ধ রাখায় এই ই-কমার্স খাতে গত ১৩ দিনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। যেখানে প্রথম ১০ দিনেই ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা-এমনটাই জানালেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতি শমী কায়সার।
তিনি বলেন-শুরুতেই ইন্টারনেট ও ফেসবুক খুলে দেয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ। তবে গত ১৩ দিনে এই খাতে প্রায় ১৭শ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে প্রতিদিন তার পরিমাণ বেড়ে চলেছে। ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে এই ব্যবসা পুরোই বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে ইন্টারনেট চালু থাকলেও গতি কম থাকায় এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক বন্ধ থাকার কারণে এখনো সংকট কাটিয়ে উঠেনি। এছাড়া কারফিউ ও নিরাপত্তা ঝুঁকিসহ বিভিন্ন কারণে ই-কমার্স খাতের ৯৫% শতাংশ লেনদেন এখনো বন্ধ রয়েছে বলে তিনি জানান।
বুধবার (৩১ জুলাই) বিকেলে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সভাপতি শমী কায়সার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
সভাপতি বলেন, ই-ক্যাব থেকে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য জরিপ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
শমী কায়সার বিগত কয়েকদিন ধরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট, মোবাইল ইন্টারনেট ও ফেসবুক চালু করার জন্য ই-ক্যাব থেকে যেসব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা তুলে ধরেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত উল্লেখ করে তিনি বলেন আমরা কেউ এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না এবং পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
ইন্টারনেট চালু ও ফেসবুক খুলে দেয়া ছাড়াও ই-ক্যাব নেতৃবৃন্দ সরকারের নিকট তাদের দাবী প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন। যেসব উদ্যোক্তার ব্যাংক ঋণ রয়েছে তা পরিশোধের সময়সীমা নূন্যতম ০৬ মাস বৃদ্ধি করা, সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করা, লজিস্টিকস ও ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাময়িকভাবে ভ্যাট মওকুফ করা, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফি মওকুফ ও মেয়াদ বৃদ্ধি করার দাবী জানান। এছাড়া ফেসবুকে সচল থাকা বিজ্ঞাপনের মূল্য ফেরত বা পূণবিজ্ঞাপনের জন্য ফেসবুকের সাথে যোগাযোগ করার জন্য সরকারকে পরামর্শ দেন।
তাদের সংগঠন-ও ফেসবুকের সাথে যোগাযোগ করবেন বলেও জানান শমি কায়সার।
এদিন বিকেলে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব)কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া এই প্রেসমিটে সভাপতি বলেন-বাংলাদেশে ২০ লাখ উদ্যোক্তা ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল। শুধু ফেসবুকভিত্তিক উদ্যোক্তা রয়েছেন ৫ লাখেরও বেশি। তারাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এফ কমার্স খাতে নারী উদ্যোক্তরা অনেক ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক নাছিমা আক্তার নিশা। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন-পাঁচ লক্ষ নারী-পুরুষ এফ-কমার্সে কাজ করছেন। তারা সবাই এখন আর্থিক ক্ষতির মধ্যে দিয়ে গেছে। এটি কাটিয়ে উটতে বেশ বেগ পোহাতে হবে। আমার তাদের নির্ভরতা কমিয়ে- সবার ডাটা সংগ্রহ করে, একটু সময় নিয়ে তাদের ডিজিটালি ট্রান্সফার করতে কাজ করব।
চলমান সংকটে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকা ও অন্যান্য কারণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত ই-কমার্স খাতের ক্ষয়ক্ষতি ও বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তা থেকে উত্তরণে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা।