ক্রমবর্ধমান বায়ু দূষণের কারণে দিল্লির সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। শীত মৌসুম শুরুর আগেই ভয়াবহ বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। প্রতিদিনই বাতাসের মানের অবনতি হচ্ছে। তাপমাত্রা হ্রাস, ধোঁয়া, ধূলিকণা, বাতাসের কম গতি, যানবাহনের নির্গত ধোঁয়া এবং ফসলের খড় পোড়ানোর কারণে শীতকালে দিল্লি এবং উত্তর রাজ্যগুলো প্রতি বছরই ধোঁয়াশার সম্মুখীন হয়।
এক্স-এর একটি পোস্টে ভারতের দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আতিশি মারলেনা সিং বলেছেন, শহরটিকে ঘিরে থাকা ঘন ধোঁয়াশার কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস অনলাইনে চলবে। বিবিসি বলছে, দিল্লি এবং আশপাশের শহরগুলো ব্যাপক মাত্রায় দূষণের কারণে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কবলে পড়েছে। বৃহস্পতিবারও দিল্লির বাতাসে সূক্ষ্ম কণার পরিমাণ নিরাপদ মাত্রার চেয়ে ৫০ গুণেরও বেশি ছিল।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সকালে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে ৪৯৮ স্কোর করে বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে শহর।
ফলে বিভিন্ন এলাকায় দৃশ্যমানতাও কমে এসেছে। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের অ্যাপ সামিরের তথ্যমতে, দিল্লির শীর্ষ পাঁচ দূষিত এলাকায় হলো জাহাঙ্গীরপুরি, বাওয়ানা, ওয়াজিরপুর, রোহিনি এবং পাঞ্জাবি বাগ। এ ছাড়া পালাম ও সাফদুরজংয়ে দৃশ্যমানতা ৫০০ থেকে ৪০০ মিটারে নেমে এসেছে।
এদিকে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (আইকিউএয়ার), সুইস-ভিত্তিক একটি পর্যবেক্ষণ গোষ্ঠী অনুসারে, দিল্লিতে আজ বৃহস্পতিবার প্রতি ঘনমিটার বাতাসে গড়ে ২৫৪ টুকরো সূক্ষ্ম কণা পদার্থ বা পিএম ২.৫ পাওয়া গেছে।
এদিকে বৃহত্তর কণার মাত্রা পিএম ১০ গড়ে ৪৯৫-এ পৌঁছেছে। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুসারে অনিরাপদ।
কারণ সূক্ষ্ম কণাগুলো ফুসফুসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গর ক্ষতি করতে পারে। এটি কার্ডিওভাসকুলার এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগের কারণ হতে পারে। গবেষণা দেখা গেছে, শিশুদের বিকাশও বিলম্বিত করতে পারে এই সূক্ষ্ম কণা।
স্থানীয় মিডিয়া অনুসারে, দিল্লির বাসিন্দারা চোখের জ্বালা এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যার কথা জানিয়েছেন। দূষণ মোকাবিলায় শুক্রবার সকাল ৮টা থেকেই কার্যকর হতে চলেছে তৃতীয় স্তরের সতর্কতা (গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান ৩ বা জিআরএপি ৩)। বেশ কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণও জারি করা হচ্ছে এই সতর্কতামূলক পদক্ষেপের আওতায়।
দিল্লিতে এখনই প্রয়োজন নেই, এমন নির্মাণের কাজ কিংবা ভাঙার কাজ আপাতত বন্ধ থাকবে। কমবে রাস্তায় চলাচলকারী বাসের সংখ্যাও। এ ছাড়া দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশি মারলেনা জানিয়েছেন, পরবর্তী সিদ্ধান্ত না জানানো পর্যন্ত আজ থেকে দিল্লির সব প্রাথমিক স্কুলে অনলাইন পাঠদান চলবে।
সূত্র: বিবিসি