ঢাকা,
মেট্রোরেলের মতিঝিল থেকে কমলাপুর সেকশনেরইলেকট্রো–মেকানিক্যাল সিস্টেমের কাজের জন্য জুন২০১৮ সালের দরপত্র দাখিলকারী ঠিকাদারিপ্রতিষ্ঠানকে সম্প্রতি নিয়োগ করা হয়েছে। এইকাজের প্রাথমিক ব্যয় নিয়ে সম্প্রতি কিছু প্রশ্নউঠলেও, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্দেশেমেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সফল দর–কষাকষির মাধ্যমেউল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করেছে।সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (আরডিপিপি) (দ্বিতীয় সংশোধনী) এই খাতে ২৭৪ কোটি টাকাবরাদ্দ রাখা হয়েছিল। কার্যত ২৭৪ কোটি টাকাআরডিপিপি বরাদ্দ একটি অনুমোদিত ব্যয়। প্রকৃতব্যয় দরপত্র মূল্যায়নের মাধ্যমে নির্ধারিত হয় যামূল্যস্ফীতি, মুদ্রার বিনিময় হার পরিবর্তন, কাঁচামালসরবরাহের জটিলতা এবং পরিবহন খরচ ইত্যাদিরউপর নির্ভরশীল।
জুলাই ২০২৩ সালে Marubeni-L&T –এর প্রস্তাবিতমূল্য ছিল প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা। কিন্তু অন্তর্বর্তীসরকার এত বেশি দরে কাজ করাতে অনীহা প্রকাশকরে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্দেশেডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ এক্ষেত্রে নেগোসিয়েশনস্ট্রাটেজি গ্রহণ করে এবং দীর্ঘ আলোচনা ওদরকষাকষি করে ৪৬৫ কোটি টাকায় কাজটি করাতেউভয়পক্ষ সম্মত হয়। সেই সাথে ১ বছর DNP (Defect Notification Period) বৃদ্ধি করা সম্ভবহয়েছে। উল্লেখ্য যে উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিলপর্যন্ত মেট্রোরেলের ইলেকট্রো–মেকানিক্যাল কাজMarubeni-L&T সম্পাদন করেছিল, সেক্ষেত্রে একইঠিকাদার থাকায় মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্তকাজে System Integration-এ সুবিধা হবে।
এই চুক্তির মাধ্যমে প্রায় ১৮৫ কোটি টাকা নিটসাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে এবং এই চুক্তি সরকারের‘ব্যয় অপ্টিমাইজেশান‘ (খরচ যৌক্তিকীকরণ) নীতিরপ্রতিফলন।
একই সঙ্গে, প্রকল্পে অর্থায়নকারী সংস্থা জাইকা(JICA)-এর সাথে করা চুক্তি অনুযায়ী তাদেরমনোনীত ঠিকাদার দিয়েই কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে।অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও স্বচ্ছতা ও কঠোরদর–কষাকষির মাধ্যমে জনগণের অর্থের সর্বোত্তমব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।
অন্তবর্তী সরকারের গৃহীত ব্যবস্থার ফলে নিন্মরুপউন্নয়ন সাধিত হয়েছে–
গত ৫ আগস্ট ২০২৪ এর পূর্ববর্তী আন্দোলনসংগ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপাড়া ও মিরপুর–১০ সহঅন্যান্য মেট্রোরেল স্টেশনগুলো মাত্র ১৮ কোটি টাকাব্যয়ে এবং আড়াই (২.৫) মাসে মেরামত সম্পন্ন করাহয়েছে, যা পূর্ববর্তী সরকারের আমলে ৩৫০ কোটিটাকায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মেরামতেরজন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
সম্প্রতি পিক–আওয়ারে পরবর্তী ট্রেনের জন্যঅপেক্ষার সময়সীমা ৮ মিনিট থেকে কমিয়ে ৬মিনিট হয়েছে, যা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মাত্র পাঁচমিনিটে আনা হবে। এছাড়াও সম্প্রতি মেট্রো রেলেরপরিষেবার সময় ১ ঘণ্টা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এছাড়া ভাড়া–বহির্ভূত আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্টেশন ওট্রেনের অভ্যন্তরে বাণিজ্যিক স্থান, ব্যাংক, এটিএম ওসিআরএম বুথ স্থাপন এবং ডিজিটাল বিজ্ঞাপনেরমতো কাজের চুক্তিগুলো চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য ১০মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার প্যানেল স্থাপনেরচুক্তি স্বাক্ষরের জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
প্রতিটি প্রকল্পের ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয়নকশা সংশোধন, দর বিশ্লেষণ ও প্রতিবেশীরাষ্ট্রসমূহের সাথে দর তুলনার মাধ্যমে সর্বনিম্ন স্তরেপ্রাক্কলন নির্ধারণের কাজ চলমান আছে। মেট্রোরেলের পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরপর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধিরচেষ্টা অব্যাহত আছে। এছাড়াও Real-Time Technology Transfer, DMTCL এর Institutional Capacity বৃদ্ধি করা, স্থানীয়ভাবে চাকুরীর সুযোগসৃষ্টি করা এবং স্থানীয় শিল্পের বিকাশে কার্যকরীউদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে।
